১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

ভোরের জানালা

জনগণের কল্যাণে অগ্রদূত

প্রক্টরের সামনেই জবি ছাত্র গ্রেপ্তারের অভিযোগ 

1 min read

জবি প্রতিনিধি:
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) কোনো নিরপরাধ শিক্ষার্থী হয়রানির শিকার হলে সরাসরি প্রক্টর অফিসে যোগাযোগ করার নোটিশ দিয়ে গত সোমবার (২৯ জুলাই) বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

কিন্তু এর আগে গত ১৯ জুলাই খোদ প্রক্টরের সামনে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে পুলিশ ধরে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ধরে নিয়ে যাওয়ার সময় প্রক্টর কোনো রকম বাঁধা প্রদান করেননি দাবি সাধারণ শিক্ষার্থীদের।

গত সোমবার প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সহিংসতা ও আইন-শৃঙ্খলা বিনষ্টকারী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকার অভিযোগে বিভিন্ন ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নানা সংবাদ গণমাধ্যমে পরিলক্ষিত হচ্ছে। এ প্রক্রিয়ায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো নিরপরাধ শিক্ষার্থী যাতে হয়রানির শিকার না হয় তা নিশ্চিত করার জন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আহ্বান জানাচ্ছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষার্থী হয়রানির শিকার হলে তাকে প্রক্টর অফিসকে অবহিত করার নির্দেশনা প্রদান করা হলো। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্ভাব্য সব সহযোগিতা প্রদান করা হবে।

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের (শিক্ষাবর্ষ: ২০১৯-২০) ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী মোঃ নূর নবীসহ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে গত (১৯ জুলাই) দুপুর ১২টা ১১ মিনিটে ক্যাম্পাসে প্রবেশের চেষ্টার করার সময় প্রথম গেইট থেকে আটক করা হয়। নূর নবীকে আটকের সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন কয়েকজন সাংবাদিক, অন্যান্য শিক্ষার্থী এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন। আটকের সময় তার হাত ব্যান্ডেজ করা ছিল। শাহবাগ থানায় বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দায়ের করা মামলায় নূরকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন,নূর নবী কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন। শাহবাগ থানায় বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দায়ের করা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পুলিশের হাতে আটকের আগের দিন সংঘর্ষের সময় তার হাত ভেঙে যায়। শনাক্ত করার সময় ঘটনাস্থলে কয়েক শতাধিক শিক্ষার্থী ও শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন। ভাঙা হাতে বোমা ভর্তি ব্যাগ নিয়ে যাওয়া কীভাবে সম্ভব? আমরা আদালতে এই বিষয়গুলি উত্থাপন করেছি কিন্তু আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেন, চোখের সামনে প্রক্টরের উপস্থিতিতে নুর নবী কে গ্রেফতার করে নিয়ে গেলো। আর এরা আবার নোটিশ দিছে নিরাপত্তাহীনতায় থাকলে তাদের জানাতে। ধিক্কার ধিক্কার ধিক্কার।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী মাসুদ রানা জানান, নূর নবীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের সামনে থেকে আন্দোলনের আগ মুহূর্তে মিথ্যা মামলায় পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। পরে তার মুখে কালো কাপড় বেঁধে তাকে অনেক মারধর করেন। তাকে এখন পর্যন্ত পরিবারের সাথে যোগাযোগ করতে দেয়নি। তাকে বর্তমানে কেরানীগঞ্জ কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

জবি প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, নূর নবীকে আটক করার সময় আমি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলাম । নামাজের পর নূর নবীসহ কয়েকজন বিক্ষোভ মিছিলের অনুমতি নেওয়ার জন্য আমার কাছে আসেন। এর পরেই ডিবি অফিসের কয়েকজন এসে নূর নবীকে কথোপকথনের সময় শাহবাগ থানায় বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দায়ের করা মামলায় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ধরে নিয়ে যায়। যেহেতু সুনির্দিষ্ট প্রমাণ ডিবির কাছে আছে তার জন্য তাকে বের করে আনা সম্ভব হচ্ছে না।

ঘটনার আগের দিন নূর নবীর হাত ভেঙ্গে যাওয়ায় ব্যান্ডেজ করা হয়। ব্যান্ডেজ হাতেও কি বিস্ফোরক দ্রব্য বহন করা সম্ভব প্রতিবেদকের এমন প্রশ্নে প্রক্টর বলেন, অবশ্যই সম্ভব না। কিন্তু ডিবি অফিস থেকে জানানো হয়েছে তাদের কাছে প্রমাণ রয়েছে। সেই ক্ষেত্রে তাকে মুক্ত করে আনা কঠিন হয়ে পড়েছে।

পুলিশ যেসব শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তার করবে তাদের কোনো না কোনো মিথ্যা মামলায়ও গ্রেপ্তার করতে পারে এমন প্রশ্নে প্রক্টর বলেন, আমরা চেষ্টা করছি শিক্ষার্থীদের জেল থেকে বের করে আনার। বেশির ভাগ শিক্ষার্থীকে বের করতে পারলেও কিছু শিক্ষার্থীর মোবাইলে পুলিশ কিছু তথ্য পাওয়ায় তাদের বের করে আনা সম্ভব হচ্ছে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের দুইজন শিক্ষার্থীকেও ছাড়িয়ে আনা সম্ভব হয়নি।

প্রতিবেদকের সাথে কথোপকথনের সময়  বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. জাহাঙ্গীর হোসেন সবাইকে ধৈর্য ধরার আহবান করেছেন।

Please follow and like us:
স্বত্ব © ২০২৪ ভোরের জানালা | Newsphere by AF themes.
Translate »