দেবিদ্বারে ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্ব পালন করছে শিক্ষার্থীরা
1 min readমোঃ তোফায়েল আহমেদ
দেশের চলমান পরিস্থিতিতে সারা দেশের ন্যায় কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলা মেইন সড়কগুলোতে দেখা ট্রাফিক পুলিশের মিলছে না। তাই উপজেলা শহরের বিভিন্ন মোড়ে যানজটের কারণে সর্ব সাধারণ ও যান চলাচলে দেখা দিয়েছে বিশৃঙ্খলা। আর সেসব যানজট নিরসনে ও রাস্তায় শৃঙ্খলা ফেরাতে এগিয়ে এসেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অংশ নেওয়া সাধারণ শিক্ষার্থী ও জনতা।
সরেজমিনে দেখা যায়, বৃহষ্পতিবার (৮ আগস্ট) সকাল সাতটা থেকে শুরু করে রাত ৯টা পর্যন্ত দেবিদ্বার উপজেলা শহরের বিভিন্ন ব্যস্ততম রাস্তার মোড়ে যানজট নিরসনের জন্য শতষ্ফুর্ত ভাবে কাজ করেছেন তারা।
সড়কে ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্ব পালনকারী শিক্ষার্থী রায়হান জানান, গতকাল বুধবার থেকে আমরা যানজট নিরসনে কাজ করে আসছি। আমার মতো আরো প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থী লাঠি, বাঁশি হাতে নিয়ে রাস্তার মোড় গুলোতে যানজট নিরসনে কাজ করছে।
বৈষমবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমর্থন দিয়ে তাদের সাথে ৪ আগষ্ট অসহযোগ আন্দোলনে অংশ নেওয়া গণমাধ্যমকর্মী মেহেদী হাসান রিয়াদ জানান, ৫ আগস্ট দেশের সরকার প্রধান শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর ক্ষমতা হাতে নেয় সেনাবাহিনী। এরপর আনন্দ মিছিল সহ কিছু কিছু স্থানে বিশৃঙ্খলার দেখা মেলে। ফলে সেদিন রাত থেকে দেশের পুলিশ কর্ম বিরতীতে চলে যান। এতে করে আইনগত কার্যক্রম সহ ট্রাফিক বিভাগের কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যায়। তবে, আমার খুব আনন্দ হচ্ছে এটা দেখে, আমাদের সোনার সন্তান, দেশ প্রেমি শিক্ষার্থীরা তাদের বিবেগকে কাজে লাগিয়ে দেশের সম্পদ রক্ষা সহ শৃঙ্খল দেশ গড়ার কাজ করে যাচ্ছে। গতকাল থেকে ট্রাফিক মনিটরিং সহ বিভিন্ন সংস্কারমূলক কাজে অংশ নিচ্ছে তারা। আমি আশা রাখি, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেওয়া সাধারণ ছাত্র-জনতা আগামীর দেশ গঠনে ভূমিকা পালক করবে।
ট্রাফিক মনিটরিংএ অন্যান্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন স্বেচ্ছাসেবক পারভেজ সরকার, সুজন, নাহিদ, মাসুদ রানা, আলীনূর হোসেন, সোহাগ, সিফাত, সাঈদ, রফিক, মামুন, নাঈম, আবির সহ আরও অন্তত অর্ধশত শিক্ষার্থী। যাদের নাম অনেকেই জানা নেই।
বুধবার দুপুরে দেবিদ্বার নিউ মার্কেট চত্ত্বরে দেখা যায়, ট্রাফিক পুলিশের মতোই শিক্ষার্থীরা ইশারা-ইঙ্গিতের মাধ্যমে গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছেন। এছাড়া টিম ভাগ করে বাজার নিয়ন্ত্রণ সহ উপজেলাকে পরিচ্ছন্ন দেবিদ্বার গড়তেও কাজ করে যাচ্ছেন তারা। এদিকে রাস্তায় ৫ আগস্ট থেকে পুলিশ বাহিনীকে দেখা যায়নি।
সাধারণ শিক্ষার্থীরা জানান, আমরা সকাল থেকেই দেবিদ্বার নিউ মার্কেট শহীদ রুবেল চত্ত্বর (স্বাধীনতা চত্ত্বর) মোড়ে অবস্থান করি নিজ উদ্যোগে। যাতে যানজট না হয় সেদিকে খেয়াল রাখার জন্য আমাদের এই উদ্যোগ।
শিক্ষার্থীরা বলেন, গণ-অভ্যুত্থানের পর থেকে গোটা শহরে কোনো ট্রাফিক পুলিশ নেই। এ অবস্থায় শহরবাসীকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা আমাদের দায়িত্ব। এই দায়িত্ববোধ থেকে আমরা সড়কে যানজট নিয়ন্ত্রণে নেমেছি। ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা দায়িত্বে না আসা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা এই কাজ চালিয়ে যাবে।
স্থানীয় কিছু মোটর চালিত রিস্কার ড্রাইভার বলেন, দেশটা নতুন করে স্বাধীন হয়েছে। যাদের কারণে দেশ স্বাধীন হলো তারা আজ আবার ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছে দেখে খুব ভালো লাগছে।