১৯ অক্টোবর, ২০২৪

ভোরের জানালা

জনগণের কল্যাণে অগ্রদূত

কুমিল্লায় প্রবাসীর খামারে প্রতারনা করে দুর্ধর্ষ চুরি

1 min read

কুমিল্লা প্রতিনিধিঃ
কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ার উপজেলার মালাপাড়া ইউপি’র রামনগর গ্রামে এক প্রবাসীর খামারে প্রতারনা করে দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনা ঘটেছে৷ স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া কসবা থানার প্রবাসী উজির প্রঃ শাহিন তিন বছর আগে ব্যাংক ঋণ করে একটি হাসের ফার্ম করেন তার নিজ এলাকা কুটি চৌমুহনীতে ।সেই ফার্মের দেখাশোনা করার জন্য মাসিক বেতনে নিয়োগ দেন মো: সাবারক নামের একজন অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ব্যক্তি কে সে কিনা সিলেট হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলার বাসিন্দা। শাহিন ও তার কর্মচারী সাবারক দীর্ঘ দিন যাবত চালিয়ে আসছিলেন খামারের ব্যাবসা। উদ্যোক্তা শাহিনের সেই আশা ধুলিসাৎ করে দেয় তারই কর্মচারী সাবারক ও তার সহযোগী মহসিন। খড়া মৌসুম দেখা দিলে সাবারক শাহিনকে পরামর্শ দেয় ফার্মটি সাবারককের নিজ এলাকা সিলেটের হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলায় স্থানান্তর করার জন্য পরামর্শ দেয়, কারন ঐ এলাকায় পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি সহ বড় বড় বিল বা জলাশয় রয়েছে যেখানে হাঁস সারাদিন পানিতে সাঁতার কাটতে পারবে এবং হাঁসের প্রকৃতি থেকে খাবার সংগ্রহ করার কারনে কমে আসবে খামার পরিচালনা ব্যায়৷ এ লোভনীয় প্রস্তাবের ফাদেঁ পা দেয় উদ্যোক্তা শাহিন৷ প্রায় দুই হাজার সাতশত হাসঁ স্থানান্তরিত করা হয় সাবারকের খামারে৷ এর পর থেকেই লোকসানের খাতা ভারি হতে থাকে শাহিনের । হতভাগা সাহিন লোকসানের বোঝা আর ব্যাংকের ঋণের কথা চিন্তা করে ১৪,৬৫০০০ চৌদ্দ লাখ পয়সটরি হাজার টাকার পরিমানের হাঁস ও মজুদ খাদ্যের হিসাব কর্মচারী সাবারক কে বুঝিয়ে দিয়ে সৌদি আরবে পারি দেন।সাহিন সৌদিতে যাওয়ার পর মোবাইলে নিয়মিত খোঁজখবর নেয়ার এক পর্যায়ে কর্মচারী সাবারক জানান হাঁসের রোগ দেখা দেয়ায় ৯০০ শত হাঁস বিক্রি করে দিয়েছে সে। শাহিন একটু রাগান্বিত হয়ে সাবারককে বলে তুমি জিঙ্গেস না করে বিক্রি করলে কেন? সাবারকের কোন উত্তর রনা পেয়ে সাহিন বলে টাকাগুলো কোথায় সাবারক বলে ভাই আগামী দিন আমি টাকা আপনার বাড়িতে দিয়ে আসব বলে ফোন কেটে দিয়ে পরের দিন শাহিনের পরিবারের মোবাইল নাম্বারে ৫০ হাজার টাকা পাঠিয়ে মোবাইল বন্ধ করে দেয়। এর পর থেকে সাহিন আর কোন যোগাযোগ করতে না পেরে ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে পেরেশানিতে দুশ্চিন্তা করে হার্ট অ্যাটাক করে। পরবর্তীতে কিছুটা সুস্থ হলে শাহিন চারজন প্রতিনিধি পাঠায় হবিগঞ্জের বানিয়াচং এলাকায় সাবারকের বাড়িতে,কিন্ত সাবারক অনেক অপকৌশল করে কয়েকবার তাদের ফিরিয়ে দেয়। একপর্যায়ে হবিগঞ্জ বানিয়াচংয়ে সাবারকের এলাকার মেম্বার মোঃ কামাল মিয়ার সহযোগিতায় একটি গ্রাম্য সালিশের আয়োজন করে সালিশের সর্দারগণ (মনগরামতো)একটা রায় দেন যে ২ লক্ষ টাকা এবং ৫০০ হাঁস সাহিন কে ফেরত দিতে হবে বলে সাবারককে নির্দেশ দেন।কিন্তু উদ্যোক্তা শাহিনের প্রতিনিধিরা সাবারকের কাছ থেকে আবারও খালি হাতে ফিরে আসায় উদ্যোক্তা শাহিনের জীবনে ঋণের দুর্ভোগ আরো বেড়েই যায়।
দেশের বাড়িতে শাহিনের স্ত্রী ঋণদাতাদের কুটোবাক্য শোনে অপমান সহ্য করতে না পেরে শাহীনকে ডিভোর্স দিয়ে বাবার বাড়ি চলে যায়। প্রবাসীদের দুঃখ আসলে কেহই বোঝেনা সাহিন দিশেহারার মতো আবারো শেষবারের মতো তার প্রতিনিধি পাঠায় হবিগঞ্জের বান্য়াচংয়ে সাবারকের কাছে ব্যার্থ হলে বিকেল বেলায় পাঠায় বান্য়াচং থানায় জিডি করার জন্য। জিডি লিখার পর থানার ডিউটি অফিসার জানান এই এলাকার মানুষ ভালো না সরকার দলের মানুষ আপনারা তারাকরে কসবায় চলে যান সন্ধ্যা হলে হয়তো আপনাদের খতি করতে পারে। এই ভয়ে হতভাগা সাহিনের প্রতিনিধিগন দ্রুতই কসবায় ফিরে আসেন।কিছুটা সুস্থ সাহিন প্রবাসে আর পরিশ্রম করার শারিরীক খমতা না থাকায় গত আট মাস আগে স্থায়ীভাবে চলে আসেন সৌদি আরব থেকে। আসার পর থেকেই কর্মচারী সাবারকের সন্ধ্যানে ঘোরাঘুরি করতে থাকে।একপর্যায়ে গত সপ্তাহে শাহিনের এক আত্মীয়ের মাধ্যমে জানতে পারে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার রামনগর গ্রামে সিলেট হবিগঞ্জের একটি গ্রুপ প্রায় ২৪শত হাঁসের পাল নিয়ে অবস্থান করতেছেন। এই খবর পেয়ে নিশ্চিত হওয়ার জন্যে রামনগর গ্রামে এসে দুরথেকে নজর রাখে হাসের পালের দিকে এবং সাবারকের উপস্থিতি দেখে নিশ্চিত হয়।নিশ্চিত হয়ে রামনগর গ্রামের কিছু গনগন্যমান্য লোকজন নিয়ে সাবারকের অস্থায়ী ফার্মে গেলে সাবারক তার সহযোগী মোহসিন কে রেখে কৌশলে পালিয়ে যায়।শাহিনের কান্নাকাটি দেখে এলাকার সাহেব সর্দারগণ সত্যতা যাচাই বাছাই করে গত ৬-১০-২০২৪ইং তারিখে মালাপারা ইউনিয়নের সকল গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের এবং পার্শ্ববর্তী ইউনিয়ন ভারেল্লা উত্তর ইউপির কিছু গণ্যমান্য ব্যক্তিগণকে উপস্থিত রেখে বাদী বিবাদীদের পক্ষের ব্রাহ্মণবাড়িয়া এবং সিলেট হবিগঞ্জের কিছু গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ কে উপস্থিত করে স্থানীয় চেয়ারম্যান এর উপস্থিতিতে বড় আকারের একটি সালিশি বৈঠকের আয়োজন করেন।
বৈঠকটি হয় ব্রাহ্মণপাড়া থানার মালা পাড়া ইউপির রামনগর গ্রামে।এব্যাপারে স্থানীয় চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মামুন কে জিগ্যেস করা হলে উনি সাংবাদিক কে জানান
উপস্থিত গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ বাদী-বিবাদীদের উভয়ের কথা শুনেন এবং পূর্বে সিলেটের হবিগঞ্জের সালিশে উপস্থিত থাকা কিছু ব্যক্তিবর্গের সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে প্রমাণিত হয় কর্মচারী সাবারক শাহিনের কষ্টে গড়া হাঁসের ফার্ম থেকে লুটপাট ও চুরি করে পালিয়ে ছিল। এবং উক্ত সালিশে জুড়ি বোর্ডে যে সিদ্ধান্ত হয় উভয়পক্ষই এই সিদ্ধান্ত মেনে নেন এবং উভয় পক্ষকে একটি মিল মিশের ব্যবস্থা করে দেন।কিন্তু চোর সাবারক তিনটি জেলার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের রায় মেনে তিন দিনের সময় নেন। কিন্তু পরের দিন চোর সাবারক তার চোরচক্রের সিন্ডিকেটের প্রভাব খাটিয়ে ব্রাহ্মণপাড়া থানার এ এসআই সহ তিন চারজন পুলিশকে ভুল বুঝিয়ে পুলিশ সহ পিকাপ নিয়ে হাজির হয় রামনগরে সব হাঁস নিয়ে যাওয়ার জন্য কিন্তু গ্রামবাসী বাঁধা দিয়ে বলেন এখানে তিন জেলার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ বসে একটি ফায়সালা দিয়েছেন উক্ত ফায়সালা পরিপূর্ণ তামিল না হওয়া পর্যন্ত হাঁস গুলো গ্রামবাসীর হেফাজতে থাকবে কোন পকখই নিতে পারবেনা বলে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন সালিশে উপস্থিত থাকা গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। পরবর্তীতে পুলিশ স্থানীয় চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলে সত্যতা নিশ্চিত হয়ে থানায় ফিরে জান।আজ ৯-১০-২০২৪ইং সাংবাদিক সাবারকের ফার্মে গেলে সাবারক ও তার সহযোগী মোহসিন পালিয়ে যায়।তাদের কর্মচারীদের কাছ থেকে মোবাইল নাম্বার সংগ্রহ করে ফোন দিলে এই ব্যাপারে কোন কথা বলবেনা বলে মোবাইল বন্ধ করে দেয়।
ভুক্তভোগী হতভাগা প্রবাসী সাহিন জানান আমার জীবন তচনচ করে দিয়েছে বিশ্বাস ঘাতক সাবারক তবে যা চলে গেছে তা হয়তো পুরন হবেনা তবে গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সালিশে যে রায় হয়েছে তাহা কার্যকর হলেই সন্তুষ্ট থাকবে বলে জানান প্রবাসী সাহিন।

Please follow and like us:
স্বত্ব © ২০২৪ ভোরের জানালা | Newsphere by AF themes.
Translate »