৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

ভোরের জানালা

জনগণের কল্যাণে অগ্রদূত

কুমিল্লায় ইউপি চেয়ারম্যানকে ৪ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড; আপিল শর্তে জামিন

1 min read

নিজস্ব প্রতিবেদক:

কুমিল্লায় চাঁদাবাজির অভিযোগ তুলে দায়ের করা মামলায় দেবিদ্বার উপজেলার ১১ নং রাজামেহার ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিনকে ৪ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন কুমিল্লার আদালত।

গত সোমবার ১৫ জুলাই দুপুর ৩ টার পর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১ এর বিজ্ঞ বিচারক তানজিলা আক্তার এই রায় দেন।

রায়ে মামলার ১ নং আসামি রাজামেহার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিনকে ৪ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ২ নং আসামি চেয়ারম্যান পুত্র জাহিদুল ইসলাম সিফাত, ৩ নং আসামি জুলফিকার, ৪ নং আসামি সুজন আহম্মেদ ও ৫ নং আসামি আলমগীর শেখকে বেকসুর খালাস দেন।

রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেন বাদীপক্ষের আইনজীবী এ্যাডভোকেট তৌহিদুল ইসলাম বাবু ও এ্যাডভোকেট এম সালাম কামরুদ্দিন।

মামলা সূত্রে জানা যায়, কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার রাজামেহার ইউনিয়নের ডেনমার্ক প্রবাসী আলাউদ্দিন এর নির্মাণাধিন ভবনে আলাউদ্দিনের বড় বোন জাহানারা বেগমের নিকট স্হানীয় জসিম উদ্দিন সরকার ও তার পুত্র জাহিদুল ইসলাম সিফাত এর দলবল নিয়ে গিয়ে ১০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করে চাঁদার ১০ লক্ষ টাকা দিতে অস্বীকার করলে ভবনের দরজা, জানালা ও আসবাবপত্র ভাঙচুর করার পর আলাউদ্দিনের বড় বোন জাহানারা বেগম ও বোন জামাই শহিদুল ইসলামসহ কয়েকজন ইলেকট্রিক মিস্ত্রিকে নির্মাণাধীন ভবনের ভেতরে আটকে রেখেই বাহির দিয়ে ২ টি তালা দিয়ে চলে যাওয়ার পরে জাতীয় জরুরি সেবা হটলাইন ৯৯৯ এ কল দিলে পুলিশ ঘটনাস্হলে এসে তালা ভেঙ্গে আটককৃতদের উদ্ধার করে।

পরে এই ঘটনায় কুমিল্লা বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালত- ৪ এ ডেনমার্ক প্রবাসী আলাউদ্দিনের বড় বোন জাহানারা বেগম বাদী হয়ে ২ ডিসেম্বর ২০২১ ইং তারিখে মামলা দায়ের করেন। মামলা নং সিআর -৪১৬/২১ ইং ধারা-১৪৩,১৪৮,৪৪৭,৪৪৮,৩৮৫,৫০৬,৩৪ দঃবিঃ। মামলাটি বিজ্ঞ বিচারক জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) কুমিল্লাকে তদন্তের নির্দেশ দেন। ডিবি মো. হারুন মিয়া (তদন্ত কর্মকর্তা) উল্লেখিত মামলার ঘটনায় ১০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবীর বিষয়টি সত্য মর্মে ২ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির কথা উল্লেখ করে বিজ্ঞ আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করলে বাদী জাহানারা বেগম ডিবির তদন্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজী দিলে বিজ্ঞ বিচারক পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কুমিল্লা জেলাকে তদন্তের নির্দেশ দেন।

পিবিআই তদন্ত কর্মকর্তা মো. ইকবাল তদন্তে ঘটনার সত্যতা পেয়ে ঘটনার সাথে জড়িত আসামি জসিম উদ্দিন সরকার ২. জাহিদুল ইসলাম সিফাত,৩. জুলফিকার মিয়া,৪. সুজন আহম্মেদ, ৫. আলমগীর শেখ এর বিরুদ্ধে ১৪৩,৪৪৮,৩৪২,৫০৬,৩৪ ধারায় বিজ্ঞ আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।

গত ৫ জানুয়ারী ২০২৩ ইং তারিখে চার্জ শুনানি ম্যাধমে উল্লেখিত আসামিদের বিরুদ্ধে দন্ডবিধি ১৪৩, ৪৪৭, ৩৪২, ৫০৬, ৩৪ ধারায় বিজ্ঞ আদালত অভিযোগপত্র (চার্জগঠন) করলে দীর্ঘ সাক্ষী শুনানি, সাফাই সাক্ষী ও আগ্রুমেন্টের পর ১৫ ই জুলাই সোমবার ১ নং আসামি জসিম উদ্দিনকে ৩৪২ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে ৪ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ২ নং আসামি জাহিদুল ইসলাম সিফাত, ৩নং মো. জুলফিকার, ৪ নং আসামি মো. সুজন ও ৫ নং আসামি আলমগীর শেখকে বেকসুর খালাস দেন আদালত।

মামলার বাদী জানান, আদালতের বিজ্ঞ বিচারক আসামি জসিম উদ্দিনকে ৪ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়ে অন্যান্য আসামিদের বেকসুর খালাস দেওয়ায় আমি ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছি। আমি এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবো। বিজ্ঞ বিচারক রায়ের আদেশ দেওয়ার পর খালাস পাওয়া আসামিরা আমাদেরকে আদালত প্রাঙ্গনেই প্রকাশ্যে মারার জন্য তেরে আসেন এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে আমাদেরকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছে। আমি আমার পরিবারসহ অত্র মামলার সাক্ষীরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতেছি।

Please follow and like us:
স্বত্ব © ২০২৪ ভোরের জানালা | Newsphere by AF themes.
Translate »