ভূমি কর্মকর্তা আশরাফুল আলমের দপ্তর এখন ঘুষ দুর্নীতির আখড়া
1 min readনিজস্ব প্রতিবেদক
রাজস্ব সার্কেল জীবননগর উপজেলা ভূমি অফিসের নিয়ন্ত্রণাধীন জীবননগর পৌর ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আশরাফুল আলমের দপ্তর এখন পরিণত হয়েছে ব্যাপক ঘুষ দূর্নীতি আর রমরমা বাণিজ্যের অভয়ারণ্যে।
প্রতি কর্মদিবসে তাকে দেখা যায় দালাল পরিবেষ্টিত অবস্থায় অফিস টাইমের বাইরেও ভূমি অফিস চালু রেখে ব্যস্ত সময় পার করতে।ভুক্তভোগীদের অভিযোগে জানা যায়, নামজারীতে সমস্যা আছে বলে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করে টেনে নেন ১ হাজার থেকে শুরু করে কোনো কোনো ক্ষেত্রে ১৫ বা ২০ হাজার টাকা। এছাড়া ১৫ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা ভায়া দলিলের ক্ষেত্রে হাতিয়ে নেন বলে অভিযোগ।
আশতলাপাড়ার ভূক্তভোগী এক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন আমার নামের বানান ভুল আছে এবং দাগ নাম্বারে সমস্যা আছে বলে আমার কাছ থেকে ডিসিআরএর টাকা বাদেও হাতিয়ে নিয়েছে দশ হাজার টাকা।
মূলত এখানে ঘুষ ছাড়া মেলেনা সেবা, নড়েনা ফাইল।পৌর ভূমি কর্মকর্তা আশরাফুল আলমের মূল বাণিজ্য নামজারী, এপি, ভিপি, এলএ, পেরীফেরীভূক্ত, ফিরনিবাস বরাদ্দ নবায়ন। এছাড়া তদন্ত রিপোর্টের নামেও তিনি বেশুমার ঘুষ দুর্নীতি অব্যহত রেখেছেন বলে জানা যায়।
আর এসব অবৈধ কর্মকাণ্ডে তাঁকে সার্বক্ষণিক সহযোগিতা করে যাচ্ছে তাঁর সৃষ্ট সংঘবদ্ধ দালাল সিন্ডিকেট ও তার কথিত সহকারী এবং দলিল লেখক সমিতির কতিপয় মহুরার।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, সে দালালদের সাথে নিয়ে সকাল থেকে শুরু করে সন্ধ্যা বেলাতেও ধুমসে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। তবে কোনো গ্রাহককে এখানে ঢুকতে দেওয়া হয়না। যদি কোনো গ্রাহক বা ভূক্তভোগী কোনো কাজে অফিসে ঢুকে পড়েও তবে তাকে সুকৌশলে বেড় করে দিয়ে দালাল বা দলিল লেখকদের সাথে কথা বলার জন্য ইঙ্গিত করা হয়।
এসিল্যান্ড সাহেবের কঠোর নির্দেশ গ্রাহক ছাড়া কোনো দালাল ভূমি অফিসে ঢুকবে না। অথচ এই আদেশ তোয়াক্কা করছে না পৌর ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আশরাফুল আলম। তার চলন বলন আর ভাবভঙ্গি দেখলে মনে হবে, এটি কোনো সরকারি অফিস নয়, যেনো এটি তার আড্ডাবাজির বৈঠকখানা।আর তাই প্রতি কর্ম দিবসেই কতিপয় দালাল ও দলিল লেখক সমিতির লেখকদের সাথে বিভিন্ন কাজের বিষয়ে খোশমেজাজে দরকষাকষি করতে।
একাধিক ভুক্তভোগীরা বলেন, আশরাফুল সাহেবের অফিসে দালাল বা দলিল লেখকদের না ধরলে এই অফিসে কোনো কাজই হয়না।চতুর ভূমি কর্মকর্তা আশরাফুল বিগত শেখ হাসিনা সরকারের শাসনামলে নিজেকে শেখ হাসিনার কাছের মানুষ ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা পরিচয় দিয়ে তার কর্মস্থলগুলোতে নিজস্ব ক্ষমতার বলয় সৃষ্টি করে গড়ে তুলেছেন নিজস্ব সিন্ডিকেট।এতে ব্যক্তিগতভাবে ভূমি কর্মকর্তা লাভবান হলেও সরকার হারাচ্ছে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব।
তাই এই অফিস থেকে ভূমি কর্মকর্তা আশরাফুল আলমকে অনতিবিলম্বে অপসারণ ও তাঁর অবৈধ সম্পদের খোঁজ তল্লাশী নিতে উর্ধতন কর্তৃপক্ষ সহ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সচেতন মহল।।
আশরাফুল আলমের প্রসঙ্গে জীবননগর এসিল্যান্ড সৈয়দজাদী মাহ্বুবা মঞ্জুর মৌনা সহকারী কমিশনার (ভূমি)র সাথে কথা বললে তিনি বলেন, ভূমি অফিসে গ্রাহক ছাড়া কোনো দালাল ঢুকবে না, এটাই আমার কঠোর নির্দেশ। আর অন্যান্য বিষয়ে আমি জানতাম না। তবুও আপনি যেহেতু আমাকে অবহিত করলেন আমি বিষয়টি বিস্তারিত খোজ নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবো।
আগামীকাল প্রকাশিতব্য জাতীয় দৈনিক দেশবাংলা ও ক্রাইম নিউজ টোয়েন্টিফোরের এই প্রতিবেদনের বিষয়ে আত্মপক্ষ সমর্থনের প্রশ্নে আপনার বক্তব্য আজ অতিসত্ত্বর জানাবেন বলে আশাকরি।