১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

ভোরের জানালা

জনগণের কল্যাণে অগ্রদূত

“সুগন্ধ পেতে চাই, দুর্গন্ধ নয়”

1 min read

দেলোয়ার হোসেন রাসেল :

জুলাই বিপ্লবের ছাত্র জনতার সমস্ত অর্জনকে ধুলোয় মিশিয়ে দিতে ছাত্রলীগ থেকে আসা দু একজন সমন্বয়কই যথেষ্ট। দুধের মধ্যে একটু নোংরা পড়লে পুরো দুধই নষ্ট হয়ে যায়।
ডিভি হারুন দু একজন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীকে সমন্বয়কদের সাথে ধরে নিয়ে গিয়ে সু কৌশলে তাদেরকে হিরো বানাতে চেয়েছিল। কিন্তু তাদের চরিত্র আজ জাতির কাছে উন্মোচিত হয়েছে। আপনি যত অভিনয়ই করেন না কেন, রিয়েলিটি মানুষের চোখে ধরা পড়বেই।
তাদের কথাবার্তা এবং বডি ল্যাঙ্গুয়েজ সেই পুরনো ধাঁচেরই রয়ে গেছে।

আজ দুটো বিষয় নিয়ে কথা বলতে চাই!

১. আওয়ামী লীগ এবং আওয়ামী লীগের দোসররা ছাড়া সমস্ত গণতন্ত্রগামী রাজনৈতিক দল যে মহান নেতার নেতৃত্ব মেনে হত্যা, নির্যাতন, গুম, খুন, জেল, জরিমানা, আয়না ঘর, ডিবির অসহনীয় অত্যাচার মেনে নিয়ে
বছরের পর বছর স্বৈরাচার পতন আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন, সেই মহান নেতা কে নিয়ে হারুনের বানানো দুই দিনের হিরো ছাত্রলীগের দোসর হাস্যকর মন্তব্য করেন। সে জানেই না দেশনায়ক জনাব তারেক রহমান বিএনপি’র নির্বাচনী ইশতেহারে সেই সমস্ত প্রতিশ্রুতি অনেক আগেই ব্যক্ত করেছেন। ঠিক তাদের নেত্রী স্বৈরাচার হাসিনা গায়ের জোরে যেভাবে কথা বলতেন, তাদের মধ্যে থেকেও এই ধরনের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। শুরুতেই তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে প্রকৃত সমন্বয়কদের অনুরোধ করছি।
তার এই বক্তব্যকে গণতন্ত্রগামী প্রতিটি রাজনৈতিক দল ঘৃণা ভরে প্রত্যাখ্যান করেছেন।

২. দেশে ভারতের সৃষ্টি করা অস্বাভাবিক বন্যার কারণে হাজার হাজার মানুষ গৃহ ছাড়া হয়ে অসহায় হয়ে পড়েন। শত শত মানুষ পানিতে ভেসে মৃত্যুবরণ করেছেন। দেশের সাধারণ মানুষ তাদের অসহায়ত্ব দেখে সারা দেশ থেকে ত্রাণ নিয়ে ছুটে যান বানভাসি মানুষদের পাশে।
ছাত্র জনতার জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে দেশ আবার নতুনভাবে স্বাধীন হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে সমন্বয়করা বন্যায় কবলিত অসহায় মানুষের জন্য ত্রাণ তহবিল গঠন করেন। দেশের মুক্তিকামি জনতা তাদেরকে বিশ্বাস করে লক্ষ লক্ষ টাকা ত্রাণ তহবিল প্রদান করেন।

আমরা এবার বন্যায় সাধারণ মানুষের উপচে পড়া আবেগ দেখেছি। একজন বৃদ্ধকে দেখেছি তার মায়ের রেখে যাওয়া শেষ সম্বল ব্যাংক টি ত্রাণ তহবিলে প্রদান করতে। অসংখ্য বাচ্চাকে দেখেছি তাদের গচ্ছিত ব্যাংকের টাকা ত্রাণ তহবিল প্রদান করতে। ভিক্ষুককে দেখেছি দিনশেষে এই ত্রাণ তহবিল টাকা প্রদান করতে। অসংখ্য রিকশাচালক, ছাত্র-জনতা, মেহনতী শ্রমিক তাদের শেষ সম্বল টুকু ত্রাণ তহবিলে প্রদান করেছেন। সব মিলিয়ে প্রায় ১০/১২ কোটি টাকা সাধারণ মানুষ ত্রাণ তহবিলে প্রদান করেন।

সেটা নিয়েও সেই ছাত্রলীগ থেকে আসা সমন্বয়কেরা প্রকাশ্যে নোংরা খেলা খেলছেন। যখন জনতা প্রশ্ন তুলেছেন ত্রাণের টাকা কোথায় গেল? তখন তড়িঘড়ি করে তারা বলছেন ব্যাংকে সংরক্ষিত আছে। তাহলে কি সাধারণ মানুষ লক্ষ লক্ষ টাকা প্রদান করেছিলেন ব্যাংকে সংরক্ষণ করে রাখার জন্য? নাকি বন্যায় অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য? অর্ধেক টাকা দিয়েও যদি আপনারা অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতেন, আজ বলতে পারতেন পুনর্বাসনের জন্য আর অর্ধেক টাকা ব্যাংকে রেখে দিয়েছেন। আপনারা কি উত্তর দিতে পারবেন কোটি কোটি টাকা সাধারণ মানুষ আপনাদের কিসের জন্য দিয়েছিলেন? পারবেন না। উত্তর তো দিয়েছেন। ব্যাংকে সংরক্ষণ করে রেখেছেন। জনতা যখন হিসাব চাইলেন, তখন একটি হাস্যকর উত্তর দিয়েছেন আপনারা। আর কবে ত্রান নিয়ে আপনারা সাধারণ মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়াবেন? দু একজনের জন্য যেন সমস্ত অর্জন হাস্যকর হয়ে না যায় এদিকে প্রধান সমন্বয়কদের নজর রাখতে হবে।

আগেই বলেছি, দুষ্টু গরুর চেয়ে শূন্য গোয়াল ভালো। ডিবি হারুনের বানানো ছাত্রলীগ থেকে আসা দু একজন সমন্বয়ক দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছেন। গন্ধমাল সাথে নিয়ে ঘুরলে নিজেদের শরীরেও সেই দুর্গন্ধ ছড়িয়ে যাবে। সুতরাং ছাত্র জনতার জুলাই বিপ্লবে নেতৃত্বদানকারী সমন্বয়কদের আরো সচেতন হতে হবে। আমরা আপনাদের শরীর থেকে সুগন্ধ পেতে চাই, দুর্গন্ধ নয়।

দেলোয়ার হোসেন রাসেল
সিনিয়র সহ-সভাপতি
(সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি)
ঢাকা কলেজ ছাত্রদল।

Please follow and like us:
স্বত্ব © ২০২৪ ভোরের জানালা | Newsphere by AF themes.
Translate »