সৌমেন মন্ডল, রাজশাহী ব্যুরো প্রতিনিধিঃ রঙ্গীন পাখনা মেলে রিনিঝিনি নেচে চলা, আর চোখে চাতকের চঞ্চলতা, যেন বয়ে চলা চঞ্চলা-ঝর্ণাধারা, এ যেন এক ছোট্ট ময়ূরীর পথচলা… রায়তা নামের ছোট্ট এক নৃত্য শিল্পীর বর্ণনা দিতে গিয়ে কোন এক কবি এমন-ই বললেন। যে কিনা উপজেলা, জেলা আর বিভাগে নৃত্যে প্রথম হয়ে জাতীয় পর্যায়ে স্বর্ণ স্বাক্ষর রাখতে চলেছে অচিরেই। হুম… সেই ক্ষুদে শিল্পীর পুরো নাম লাবিবা আলম রায়তা, সে নওগাঁ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রভাতি শাখার চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী আর নৃত্যাঞ্জলী একাডেমী, নওগাঁর নৃত্যগুরু শহিদুল ইসলাম সেলিম’র শিষ্যা । স্কুল, নৃত্য একাডেমী, মঞ্চে যাবার আগে সাজসজ্জা করানো মেহেদি হাসান রিপন, এলাকা আর বাড়ীর সবার কাছে খুব প্রিয় নাম রায়তা। আর এ প্রিয় নামের পেছনে প্রধান অবদান সে নিজেই, মানে যে কোন কাজে তার উদ্দীপনা আর একাগ্রতা। এর পর মা, স্কুলের শিক্ষক আর নৃত্য একাডেমীর শিক্ষকের অবদানতো অনস্বীকার্য ।
সবার প্রিয় লাবিবা আলম রায়তা এরইমধ্যে তার প্রতিভার স্বাক্ষরে জয় করেছে জাতীয় শিশু পুরস্কার প্রতিযোগিতার বিভাগীয় পর্যায়ের প্রথম পুরস্কারটি। সৃজনশীল নৃত্যে উপজেলা ও জেলায় প্রথম হয়ে তারপর বিভাগেও প্রথম হওয়ায় সে এখন ঢাকায় যাবে সারা দেশ থেকে বাছাই হওয়া আট বিভাগের তার-ই মত প্রতিভাদের সাথে প্রতিযোগিতা করতে। যদিও তার শিক্ষক ও স্বজনরা মনে করছেন এবার দেশ সেরা পুরস্কারটা তার-ই হবে। তা মনে করার বিশেষ কারনটি অবশ্য “রায়তা” নিজেই, কারন তার রয়েছে আত্মবিশ্বাস আর নিয়মিত অনুশীলনের স্পৃহা। ইতোপূর্বে সে নৃত্য শিল্পী সংস্থা প্রতিযোগিতায় লোক নৃত্যে জাতীয় পুরষ্কার পেয়েছে, আর বিগত তিন বছর নওগাঁ জেলায় ১ম, বিভাগে দুই বার ২য় হয়েছে। এছাড়া নওগাঁর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় ১ম অথবা ২য় হয়ে থাকে বরাবরই। দুই বোনের মধ্যে বড় রায়তা খুব ছোটবেলা থেকেই নাচ করে আসছে।
নওগাঁ চক এনায়েত মডেল স্কুলের সহাকারি শিক্ষক শামীমা নাসরিন ও বিকেএসপি সাভারের সিনিয়র কোচ মোহাম্মদ আলমগীর আলম দম্পতির গর্বিত সন্তান রায়তার নানা ও খালামনি ইভানা গান করেন আর খালামনির মেয়ে গোধূলি ছায়ানট’র একজন নিয়মিত ছাত্রী বলে জানা যায়। রায়তার ছোট বোন বেবি শ্রেনীতে পড়া ৫ বছরের আফরা, সেও নাচ করে। রায়তার মা-বাবা বলেন, ভালো নৃত্য শিল্পী হয়ে বেড়ে ওঠার পাশাপাশি সে যেন একজন ভালো মানুষ হিসেবেও গড়ে ওঠে সেই প্রত্যাশা করি সব সময়।