পাঠক মুখে আমিও লেখক। লিখালিখি তেমন জানানেই আমার। তবে দু’এক কলম লিখতে জানি তা আমার বিশ্বাস।
অনেক দিন হলো কোনো কিছুই লিখা হয়নি। আজ লিখতে বসলাম। তারও একটা কারণ আছে।
বেশ কদিন ধরে ফেইসবুকে তেমন একটা যেতে পারি না। গ্রামের বাড়িতে নেটওয়ার্ক এর ব্যপক সমস্যা। আজ দুদিন ধরে কিছুটা ভালো।
সারাদিন তেমন কোনো কাজ না থাকায় ফেইসবুকে সময় দিচ্ছি। আর যত পোষ্ট সামনে পড়ছে একটু করে চোখ বুলিয়েছি। কোনো পোষ্টই মনেহয় না বাদ পড়েছে।
যাই হোক, সকল পোষ্ট গুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি চোখে পড়েছে খবর। যেহেতু নিজেও ছোট্টখাট্টো সংবাদ কর্মী সেহেতু আমার নিউজফিড্ এ এটা স্বাভাবিক। তবে অস্বাভাবিক যেটা তা হলো “চট্টগ্রামে মেডিকেল কলেজ এর ডাক্তার এর আত্মহত্যা”। বেশ কিছু নিউজ পোর্টাল ও টিভির নিউজ চোখে পড়েছে। সেখান থেকে জানতে পারলাম, ডাক্তার সাহেবের বৌ পরকীয়ায় যুক্ত ছিলেন। আমি আসলে কাটা গায়ে নুনের ছিটে দিতে লিখছি না। লিখছি আসলে সমাজ কতটা নিচে চলে এসেছে।
এই আলোচিত খবরের ফাঁকে আরেকটা খবর চোখে পড়লো, “পর্নোগ্রাফি দেখে স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণ, চেঁচামেচি করায় গলা টিপে হত্যা”। আসলে আমাদের দেশে প্রতিদিন নিউজফিড্ খুললে ধর্ষণ এর খবরটা সবার চোখে মোটামুটি কমবেশ দেখা মেলে।
গতকাল দেখলাম, ‘ঢাকার গেন্ডারিয়ায় এক অসহায় মহিলা ও তার দুই সন্তান মিলে “ধর্ষকের বিচার চাই” দাবিতে রাজ পথে নেমেছেন’। দুঃখজনক বিষয় তাদের পাশে কেউ আসেনি।
আসলে প্রতিদিন আমাদের দেশে অনেক কর্মকান্ডই ঘটে চলেছে। আমরা তা জানিও না। অনেকে আবার এটাও বলেন, “যা হইছে ভালোই হইছে, তাতে আমার কি?”।
এখন নিজের ব্যক্তিগত দিকে তাকাই। নিউজফিড্ এর খবর গুলো পড়ে আমিই বা কি করেছি? শুধু নিপীড়িত মানুষের প্রতি মমত্ববোধ আর নির্যাতনকারির প্রতি একটু ঘৃণা পোষণ করেছি। এর চেয়ে বড় কিছুই করিনি।
তবে হ্যা। সবাইকে বলতে এসেছি, ব্যবিচার বন্ধ করে একটা সুন্দর সমাজ গড়ে তুলতে চাই।
এখন আপনি হয়তো বলছেন, ‘যে ছেলে নিজেই ঠিক নেই সে কিভাবে সমাজ গড়বে?’।
আসলে কি জানেন? আমরা শুধু অন্যের দিকে আঙ্গুল তুলতে অভ্যস্ত। যার কারণে নিজের কোনো দোষই আমাদের চোখে পড়ে না।
যেমন ধরুন, ‘আপনার প্রেমিকা আজ আপনাকে না বলে কোথাও ঘুড়তে গিয়েছে। আপনি তাকে বেশ কিছু কথা শুনিয়ে দিলেন। অথচ, গত কাল রাতেও আপনি বন্ধুদের সাথে জমিয়ে আড্ডা দিয়েছিলেন। যাতে আপনার প্রেমিকার অমত ছিলো’।
আসলে আমরা নিজেরা নিজেকে কখনো বদলাতে চাই না। শুধু অন্যকে বদলে দিতে চাই।
যে মানুষগুলো নিজের স্বাধীনতা খুঁজে বেড়াই, আমরা সে মানুষগুলোই অন্যের স্বাধীনতা কেড়ে নিতে ব্যস্ত হয়ে পরি।
আমরা বুঝতে চাই না পাশের মানুষের কি চাই, সমাজের কি চাই। আমরা শুধু আমাদের নিজেদেরটাই বুঝি।
আমরা যে অন্যের কিছুই বুঝতে চাই না তার আরেকটা উদাহরণ আমি নিজেই।
আজ দুপুরে আমি কোথাও একটা যাচ্ছিলাম। হঠাৎ চোখ পরলো সরকারী পশু হাসপাতালের সামনে স্বাভাবিক এর চেয়েও অধিক মানুষ। একটু কৌতুহল হলে সামনে এগিয়ে গেলাম। গিয়ে শুনতে পেলাম, কেউ একজন অন্যের পকেট মেড়েছে। আমি কিন্তু আর সেখানে দাঁড়াই নি। চলে গিয়েছি আমার গন্তব্যে।
আচ্ছা আমি যদি সত্যিই অন্যকে বুঝতাম তাহলে ঠিক কি করতাম সেখানে? একটু দাঁড়িয়ে থেকে সে মানুষটার খুঁজ খবর নিতাম, কে ওনি। কিভাবে কি ঘটলো এসব। আসলে এটাই। তবে আমি নিজের কাজটাকে বা নিজেকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি বলে সেখান থেকে চলে গিয়েছি।
সর্বপারি একটাই কথা। আমরা চাইলেই সমাজের পরিবর্তন করতে পারি। তবে তার জন্য সর্বপ্রথম নিজেকে পরিবর্তন করতে হবে। নিজেকে অন্যের স্থানে দাঁড় করিয়ে অন্যের মতো করে ভাবতে হবে। নিজের মতো করে অন্যকে ভালোবাসতে হবে।
স্বপ্ন
01-02-2019