রাবি প্রতিনিধিঃ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) মতিহার হল থেকে মোবাইল ফোন চুরি হওয়ার ঘটনায় গেইটে তালা মেরে বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা। এসময় হল ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এসে শিক্ষার্থীদের ধমক দিয়ে ভিতরে পাঠিয়ে দেয়। এদিকে ছবি তুলতে চাইলে এক সাংবাদিককে ধাক্কা দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে এক ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে। শুক্রবার রাত সাড়ে ১১ দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মতিহার হলে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, ১৪৭ ও ২৫০ নম্বর কক্ষ থেকে দুটি ফোন কে বা কারা চুরি করেছে। এই ঘটনায় শিক্ষার্থীরা হল গেইটে অবস্থান করে এবং গেইটে তালা লাগিয়ে দেয়। তখন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এসে বাজে আচরণ করে এবং বিক্ষোভকারীদের তাড়িয়ে দেয়। এক পর্যায়ে ইংরেজি দৈনিক বাংলাদেশ টুডে’র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মুজাহিদ হোসেন ছবি তুলতে গেলে তাকে ধাক্কা দেয় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহন মন্ডল। সে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনুর অনুসারী।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, হল থেকে ফোন চুরি হয়ে যাওয়ায় আমরা গেইটে বিক্ষোভ শুরু করি এবং প্রাধ্যক্ষ স্যারের অপেক্ষায় থাকি। কিন্তু এরমধ্যে ছাত্রলীগের নেতারা এসে আমাদের ধমকাতে শুরু করে এবং বাজে ব্যবহার করে। শেষে আমাদের ভিতরে পাঠিয়ে দেয়। এ ঘটনার আগে সন্ধ্যায় হলের তৃতীয় ব্লকে এসে ছাত্রলীগ নেতা মোহন মন্ডল সিনিয়রদের সাথে খারাপ ব্যবহার করতে থাকে এবং লাঠি নিয়ে মারতে আসে।
এর আগে মোহন ছাত্রলীগের ক্ষমতাবলে বিভিন্ন সময় এরকম অত্যাচার করার তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে।
হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মিজানুর রহমান বলেন, আমরা সবাই একসাথে হল গেইটে গেলে আমাকে ছাত্রলীগ নেতা মোহন ধাক্কা দিয়ে ভিতরে ঢুকতে বলে এবং আমাকে ধমকাতে শুরু করে। একপর্যায়ে সে আমাকে আপনি কে? আপানকে এখনই পুলিশে তুলে দিবে এসব বলে ধমকাতে থাকে। এর আগেও এ ছাত্রলীগ নেতা মোহন আমার ব্লকে গিয়ে চেচামেচি করে সিনিয়রদের সাথে অসাদাচারণ করে।
সাংবাদিক মুজাহিদ হোসেন বলেন, শিক্ষার্থী বিক্ষোভ শুরু করলে ছাত্রলীগ কর্মীরা এসে বাধা দেয়। আমি ছবি তুলতে গেলে আমাকে বাধা দেওয়া হয়। এছাড়া তৃতীয় ব্লকের সিনিয়রদের সাথে খারাপ আচরণ শুরু করার সময় ছাত্রলীগ নেতা মোহনের সাথে আমি কথা বলতে গেলে সে আমার উপর উদ্যত হয়। যে আপনি কে? আপনাকে কেন এসব উত্তর দিতে যাব।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রলীগ নেতা মোহন বলেন, হঠাৎ চিৎকার চেচামেচি শুনে হল গেটে আসি। সেখানে দেখি হলের গেট বন্ধ করে দিয়ে চিল্লাচিল্লি করছে কিছু শিক্ষার্থী। আতঙ্কিত হয়ে পড়ি আমি। তখন হল গেট আটকানো কেনো জানতে চেয়ে হল গেট খুলে দেই৷ এরপর দেখি এক ভাই ছবি তুলতেছে। আমি তার এটেনশন নেওয়ার জন্য আলতো করে হাত দিয়েছিলাম। সেখানে ধাক্কাধাক্কির কিছু হয়নি বলে দাবি করেন মোহন।
জানতে চাইলে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, হলে মোবাইল চুরির ঘটনা শুনেছি। তবে কোনো সাংবাদিকের সাথে ধাক্কাধাক্কি হয়েছে সেটা শুনিনি। দেখছি বিষয়টা।
এ বিষয়ে মতিহার হলের প্রাধ্যক্ষ মুসতাক আহমেদ বলেন, ঘটনাটি শুনে গিয়েছি আমি। হল থেকে ফোন চুরি হওয়া অবশ্যই নিন্দনীয় কাজ। তারা ক্ষোভে বিক্ষোভ করতেই পারে। এতে ছাত্রলীগের ছেলেরা বাধা দেওয়ার কেউ না। আমি বিষয়টি দেখছি।