২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

ভোরের জানালা

জনগণের কল্যাণে অগ্রদূত

ছয় শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নেই শহীদ মিনার, অযত্নে-অবহেলায় নির্মিত শহীদ মিনার গুলো!

1 min read

মোঃ মামুন অর-রশীদ, ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি:

‘আমার ভাইয়ে রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’-রক্তে রাঙানো সেই ভাষা আন্দোলনের মাস। ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে ফেব্রুয়ারি ছিল ঔপনিবেশিক প্রভুত্ব ও শাসন-শোষণের বিরুদ্ধে বাঙালির প্রথম প্রতিরোধ এবং জাতীয় চেতনার প্রথম উন্মেষ।

ফেব্রুয়ারি মাস একদিকে শোকাবহ হলেও অন্যদিকে গৌরবোজ্জ্বল । পৃথিবীর একমাত্র জাতি বাঙালি ভাষার জন্য জীবন দিয়েছিল। যা এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবেও স্বীকৃত।

১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারির সেই আন্দোলনে সালাম, জব্বার, শফিক, বরকত ও রফিকের রক্তের বিনিময়ে বাঙালি জাতি পায় মাতৃভাষার মর্যাদা এবং আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রেরণা। তারই পথ ধরে আমরা পেয়েছি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ।

আর তাদের স্মরণে ঠাকুরগাঁওয়ে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় মিলে ছয় শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৫২ এর ভাষা আন্দোলনে শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করার জন্য নেই শহীদ মিনার। অপরদিকে নির্মিত শহীদ মিনার গুলো বছর জুড়ে পরে থাকে অবহেলা অযন্তে। শুধু ২১ ফেব্রুয়ারী কেন্দ্রীক চলে এগুলো রং, পরিচর্যা ও ধুয়া মুছার কাজ।

ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজ, ইসলাম নগর উচ্চ বিদ্যালয়, মুথরাপুর পাবলিক হাই স্কুল, মুথরাপুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, কোকিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ঠাকুরগাঁও পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ঘুরে দেখা যায় একই চিত্র।

জেলা শিক্ষা অফিসের তথ্য মতে- জেলায় ৩৭৭ টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে এর মধ্যে ২২১ টি বিদ্যালয়ে নেই শহীদ মিনার। অপরদিকে প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৯৯৮টি এর মধ্যে ৪২৫ টি বিদ্যালয়ে নেই শহীদ মিনার

গাছের পাতা, ধূলো ময়লা জমে রয়েছে মাতৃভাষা প্রতিষ্ঠার জন্য জীবন দানকারী শহীদদের স্মৃতির স্মরণে নির্মাণ শহীদ মিনার গুলোতে। কোন কোন গুলো ২১ ফেব্রুয়ারি আগ মূহুর্তে চলছে প্রস্তুতি আর শিক্ষার্থীরা দাবি জানান সারা বছর এগুলো যেন পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্ন রাখার হয়।

যে সকল প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই তাদের অন্যান্য বছর গুলো মত ফুল নিয়ে যেতে হবে নিকটবর্তী স্থানে। তাই নিজ বিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠান শহীদ মিনার চান শিক্ষক শিক্ষার্থীরা। তারা আরও বলেন ভাষা শহীদের আত্মত্যাগের ইতিহাস আগামী প্রজন্ম কাছে তুলে ধরতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সকল সাংস্কৃতিক কর্মসূচি গুলো যেন শহীদ মিনার কেন্দ্রীক হয় সে ব্যাপারে নজর দিতে হবে।

ইসলাম নগর উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক মোঃ আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার না থাকায় ২ কি:মি: দূরে সরকারি কলেজ গিয়ে ফুল দিতে হয়। নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার থাকলে আরও উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে দিবসটি পালন করতে পারতাম আমরা।

মুথরাপুর পাবলিক হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোঃ আলমগীর বলেন বাঙালি জাতি জীবন দিয়ে যে মাতৃভাষা পেয়েছি সেই সকল শহীদদের স্মৃতি রক্ষার্থে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শহীদ মিনার গুলো যথাযোগ্য মর্যাদা রক্ষণাবেক্ষণ করছি তিনি আরও বলনে এগুলো ভালোভাবে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সরকারিভাবে তদারকি করার জন্য একটি কমিটি করলে আরো ভালো হবে এ গুলো রক্ষণাবেক্ষণ করতে।

ঠাকুরগাঁও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ শাহীন আকতার বলেন জেলা যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শহীদ মিনার নেই তাদের চিঠি মাধ্যমে নিজ উদ্যোগের শহীদ মিনার নির্মাণের কথা বলা হয়েছে একই সাথে একুশে ফেব্রুয়ারি ভাষা শহীদদের স্মরণে দিবসটি যথাযথ মর্যাদা পালন। মাতৃভাষার শহীদদের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ কবিতা আবৃত্তি, রচনা ও আলোচনা সভা করতে বলা হয়েছে। তিনি আরও বলেন শহীদ মিনার গুলোকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা। বিদ্যালয়ের অনুষ্ঠানগুলোকে শহীদ মিনার কেন্দ্রিক করার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে যাতে আগামী প্রজন্মের কাছে ভাষা শহীদদের গুরুত্ব তুলে ধরা যায়।

Please follow and like us:
স্বত্ব © ২০২৪ ভোরের জানালা | Newsphere by AF themes.
Translate »