রাজবাড়ীতে ফসলী জমির বুক চিরে গড়ে উঠছে নতুন নতুন অবৈধ ইটভাটা
1 min readবাবলু শেখ, রাজবাড়ী :
বর্তমানে রাজবাড়ীতে ৮৮ টি ইটভাটা রয়েছে। তবে তার মধ্যে ৭৩টি ইটভাটাই অবৈধ। ছাড়পত্র ও লাইসেন্স ছাড়াই রাজবাড়ীতে ফসলি জমি, আবাসিক এলাকা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাশে গড়ে উঠেছে ইটভাটা। আর পরিবেশ রক্ষায় ইটভাটাগুলোতে কয়লা ব্যবহারের নিয়ম থাকলেও তোয়াক্কা না করে নির্বিঘ্নে গাছের কাঠ ব্যবহার করা হচ্ছে ইট তৈরির জ্বালানী হিসেবে। এতে করে যেমন পরিবেশ দূষণ হচ্ছে তেমনি শিশু ও বৃদ্ধারাও রয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ রোগের ছোবলে। তবে এসব অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাই নিচ্ছে না প্রশাসন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ক্যান্সার, শ্বাসকষ্ট, অ্যাজমা, জন্ডিস ইত্যাদি আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। পাশাপাশি গাছপালা উজাড় ও বিষাক্ত হচ্ছে পরিবেশ।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, আবাসিক এলাকা ও বাজারের পাশে গড়ে উঠেছে অবৈধ ইটভাটায় প্রধান উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে ফসলি জমির মাটি। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ভাটা কর্তৃপক্ষ প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের কোনো অভিযোগই আমলে নিচ্ছে প্রশাসন। আর পরিবেশ অধিদপ্তরের নামকাওয়াস্তে অভিযান যেন চোখেই পড়ে না এলাকাবাসীর।
এদিকে রাজবাড়ীর সদর ইউনিয়ন সহ বিভিন্ন এলাকায় অসাধু মাটি ব্যবসায়ীদের কারসাজিতে ফসলি জমির মাটি কেটে বিভিন্ন ভাটায় বিক্রিরও অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়ায় বছরের পর বছর অবাধে চলছে এসব অবৈধ ইটভাটা। ‘প্রশাসনের সামনেই গাছপালা উজাড় করে ইটভাটাগুলোতে কাঠ পোড়ানো হচ্ছে। অথচ এ বিষয়ে প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদফতরের কোন ভ্রুক্ষেপই নেই।’
সরজমিনে রাজবাড়ীর বাগমারা-কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী মহাসড়কের পাশে অবস্থিত মেসার্স সরদার ব্রিকস এন্ড ব্রাদাস ইট ভাটায় গিয়ে অভিযোগ গুলোর সত্যতা পাওয়া যায়। একই দৃশ্য দেখা যায় রাজবাড়ীর কালুখালি উপজেলার কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী মহাসড়কের পাশে মোহনপুর নামক জায়গায় মেসার্স কে,সি,বি, ব্রিকস সহ বেশ কয়েকটি ইট ভাটায় দেখা যায় বিষাক্ত কালো ধোয়া জ্বালানি ব্যবহারের জন্য গাছের কাঠ, তিন ফসলি জমির পলব মাটি ড্রাম ট্রাকে করে এনে সড়কের পাশে রাখা হয়েছে। ইটভাটার ট্রাক চলাচলের কারণে ধুলোবালিতে রাস্তায় চলা যায় না। বৃষ্টি হলে রাস্তা পিচ্ছিল হয়ে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটে’।
এদিকে প্রশাসন বলছে, নিয়মিত অভিযান অব্যাহত আছে। তাহলে কেন থামছে না অবৈধ ইটভাটার কার্যক্রম এমন প্রশ্ন জনমনে।
গণমাধ্যমের ক্যামেরা দেখে কথা না বলে উল্টো সাংবাদিকদের উপর ক্ষিপ্ত হন ইটভাটার মালিকপক্ষ। বলছেন প্রশাসন আর পরিবেশ অধিদপ্তরকে মাসোহারা দিয়েই ইটভাটা চালান তারা।
এবিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাইলে গণমাধ্যমের সাথে কথা বলতে রাজী হননি পরিবেশ অধিদফতরের কোন কর্মকর্তা।