ভোরের জানালা

জনগণের কল্যাণে অগ্রদূত

দীর্ঘদিন পানি না থাকায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পুরুষ ওয়ার্ডটি প্রায় রোগী শুন্য

1 min read

সাইফুল ইসলাম, রামগঞ্জ (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধিঃ

প্রায় ০১ মাস থেকে পানি না থাকায় লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পুরুষ ওয়ার্ডটি প্রায় রোগী শুন্য হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে চিকিৎসা নিতে আসা পুরুষ রোগীরা হাসপাতালে ভর্তি হলেও পানির অভাবে চলে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। জটিল সমস্যা নিয়ে ভর্তি হওয়া দরিদ্র রোগীরা অনিচ্ছা সত্ত্বেও নিরুপায় হয়ে থাকলেও চরম কষ্টে দিন পার করছেন।

খবর নিয়ে জানা যায়, হাসপাতালের একমাত্র পানির উৎস বড় পাম্পটি প্রায় একমাস আগে নষ্ট হয়ে যায়। ফলে পুরুষ এবং মহিলা ওয়াডের্র ওয়াসব্লকে পানি আসা বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু কয়েকদিন আগে হাসপাতাল কতৃপক্ষ মহিলা ওয়ার্ডে পানির সমস্যা সমাধান করলেও পুরুষ ওয়ার্ডে পানির সমস্যা সমাধান করেনি। ফলে পুরুষ ওয়ার্ডে ভর্তি হওয়া রোগীরা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।

সরেজমিনে রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পুরুষ ওয়ার্ডে গেলে দেখা যায়, ৪ জন রোগী বাদে পুরো ওয়ার্ড ফাঁকা। এসময় রোগীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, দীর্ঘদিন থেকে বাথরুমে পানি নেই। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন হাসপাতালে আসা রোগী ও তাদের স্বজনরা।
পানি না থাকায় ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে বাথরুমগুলো।

শ্বাসকষ্ট জনিত রোগে আক্রান্ত সিরাজ মিঞা জানান, ভর্তি হওয়ার পর থেকেই দেখছি পানি নেই। বাথরুমে যাইতেই পারিনা। এত গন্ধ, এত দুর্গন্ধ। বাথরুমের দুর্গন্ধ পুরো রুমে চড়িয়ে পড়েছে। নিজের সিটে বসে থাকাটাও মুসকিল।

উপজেলার শেখপুরা থেকে আসা ৬৫ বছর বয়সী কালু মিয়া জানান, ঠান্ডা জনিত বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে ০৪ দিন থেকে হসপিটালে ভর্তি আছেন তিনি। বাথরুমে পানি না থাকায় নিচ থেকে তার স্ত্রীকে পানি আনতে হয়। দুর্ভোগের কারণে চলে যাবেন বলে জানান তিনি।

পা ভাঙা নিয়ে চন্ডিপুর ইউনিয়ন থেকে এসেছেন দিনমজুর সালেহ আহম্মেদ। ১০ দিন যাবত হসপিটালে ভর্তি আছেন তিনি। টয়লেটে ব্যবহার করার জন্য প্রতিদিন বাইরের থেকে তার স্ত্রীকে পানি আনতে হয়। পানির অভাবে তারা গোসল করতেও পারছেননা বলে জানান।
সালেহ আহম্মেদের সাথে আসা তার স্ত্রী সুমি আক্তার জানান, ১০ দিন ধরে স্বামীর সাথে আছেন তিনি। বাথরুমের অবস্থা খারাপ দেখে অনেক রোগীরা নিজের ইচ্ছামতন চলে যাচ্ছেন। স্বামীর সমস্যা বেশি থাকায় এবং আর্থিক অবস্থা দুর্বল থাকায় বাধ্য হয়েই তাদেরকে থাকতে হচ্ছে।

রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ গুনময় পোদ্দার জানান, হাসপাতাল এবং হাসপাতালের আবাসিক এলাকার একমাত্র পানির উৎস বড় পাম্পটি গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর সম্পূর্ণভাবে বিকল হয়ে যায়। পাম্পটি বিকল হওয়ার ০৬ মাস আগে লবণাক্ত এবং ময়লা পানি আসার কারনে হেলথ্ ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টে চিঠির মাধ্যমে বিষয়টি জানিয়েছি। কিন্তু তারা সে সময় বিষয়টা কর্ণপাত করেনি।
পরবর্তীতে পানির পাম্পটি নষ্ট হওয়ার পরে তাদেরকে আবারো যথাযথ মাধ্যমে চিঠি দিলে ওনারা শুধুমাত্র মহিলা ওয়ার্ডে পানি সরবরাহ টেম্পোরারি নিশ্চিত করেছেন। কিন্তু বড় মোটরটা ঠিক করার ব্যাপারে এখনো আমাদেরকে সঠিক ডেডলাইন দিতে পারেননি। যে কারণে পানির অভাবে এখন আমাদের পুরুষ ওয়ার্ডে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ব্যাহত হচ্ছে। রোগীদের অসুবিধা হচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে রামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছাঃ শারমিন ইসলামের মুঠোফোনে কল দিলে তিনি কল রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া যায়নি।

Please follow and like us:
স্বত্ব © ২০২৪ ভোরের জানালা | Developed by VJ IT.
Translate »